ভাবসম্প্রসারণ : অর্থই অনর্থের মূল
অর্থই অনর্থের মূল
অর্থ বা সম্পদ মানব জীবনের জন্য অপরিহার্য হলেও অর্থের যথাযযাগ্য ব্যবহার করা না হলে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে নেমে আসে অকল্যাণ। অর্থ উপার্জনের পন্থা যদি সৎ না হয়, কিংবা অন্যায় স্বার্থ হাসিলের জন্য যদি অর্থের অপব্যবহার করা হয়, কিংবা হীনস্বার্থে ব্যক্তিগত ও জাতীয় সম্পদের অপচয় করা হয় তবে তা বিরাট ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জীবনের প্রয়ােজনে অর্থের ভূমিকা ও প্রয়ােজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না। এমন কি অর্থ ও সম্পদ ছাড়া জীবনে সুখ, শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করা যায় না। কিন্তু অর্থ ও সম্পদ অনেক সময় সুখ ও কল্যাণের বদলে অকল্যাণ বয়ে আনে। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যুদ্ধ সংগ্রাম ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, এর মূলে বিরাজ করছে অর্থ ও সম্পদের অধিকার আদায়। দেখা যায়, সবরকম অঘটন-ঘটনার পিছনের চালিকা শক্তি হিসেবে অর্থই বারবার অনর্থ ডেকে আনে। বর্তমান পৃথিবীর ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। দেশে-দেশে, জাতিতে-জাতিতে যে উৎকণ্ঠা ও সংকটের বৈরী পরিবেশ এর উদ্দেশ্যই হচ্ছে লাভবান হওয়া, অর্থাৎ অর্থ জোগার ও সঞ্চয় করা। তাহলে স্পষ্ট যে জগতে সকল অপকর্মের মূলে রয়েছে অর্থ। অন্যায় স্বার্থ হাসিলের জন্য অর্থকে টোপ হিসেবে কাজে লাগায় হীনচরিত্রের মানুষ। অর্থলােলুপ মানুষ অর্থের লােভে জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়। তখন তার ন্যায়-অন্যায় বিবেচনা, নীতি-আদর্শ লােপ পায়। সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ও সীমাহীন দুর্নীতির মূলকারণ উদগ্র অর্থের লালসা। অন্যায় পথে অর্জিত অর্থ মানুষকে বিবেকহীন ও দাম্ভিক করে তােলে। অর্থের দাপটে তার বুদ্ধিবিবেচনা লােপ পায়। দুনিয়াটা টাকার বশ’-এটাই তার অর্থ-বিত্ত ব্যবহারের মূলমন্ত্র হয়ে দাঁড়ায়। পৃথিবীতে সকল মানুষ সমান হলেও একশ্রেণীর লােক অর্থ-বিত্ত কুক্ষিগত করে মানব সমাজকে শ্রেণীবিভক্ত করেছে।